মোঃ শাহাব উদ্দিন আহমেদ কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এনটিসি’র মালিকানাধীন পাত্রখোলা চা বাগানে বকেয়া মজুরির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সহস্্রাধিক চা শ্রমিক। ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) মালিকানাধীন পাত্রখোলা চা বাগানসহ সকল চা বাগানের শ্রমিকরাও দেড় মাসের বেতন-ভাতা, রেশন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত পাত্রখোলা চা বাগান ফ্যাক্টরির ফটকের সন্মুখে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মাবনবন্ধনে বক্তারা বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে মজুরি বন্ধ রয়েছে। শুধু মজুরী নয় তাদের রেশন ও চিকিৎসা সেবাও বন্ধ রয়েছে,হাসপাতাল গুলোতে ঔষধ নেই। তারা বলেন,কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। কত কষ্ট করে প্রতিদিন শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু মজুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে করে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অনেক দোকানীরাও আর বাকি দিতে চাইছে না। দ্রæত তাদের বকেয়া মজুরি প্রদান না করা হলে আগামী সোমবার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বক্তব্য রাখেন,পাত্রখোলা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সেক্রেটারি মোবারক হোসেন,আমিনুল ইসলাম আমুল, চা শ্রমিক যুব নেতা প্রদীপ পাল, চা শ্রমিক সর্দার স্বপণ মাদ্রাজি, শ্রমিক নেতা স্বপন কুর্মী প্রমুখ। পাত্রখোলা চা বাগানের ম্যানেজার দিপেন সিংহ বলেন,৬ জন পরিচালক পদত্যাগ করায় ও এমডি(চেয়ারম্যান) পলাতক থাকায় এমন সমস্যার সৃষ্ঠি হয়েছে। তবে তিনি বলেন, এই মাসের ২০ তারিখের মধ্যে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে। সাপ্তাহিক মজুরির না পাওয়ায় কমলগঞ্জের মদনমোহনপুর চা বাগানের শ্রমিকদের ১ঘন্টা কর্মবিরতি পালন কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি ঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মদনমোহনপুর,চা বাগানে চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি প্রদান না করায় ১ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছে চা শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চা বাগানে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। পরে শ্রমিক নেতাদের অনুরোধে শ্রমিকরা কাজে ফিরে যায়। কর্মবিরতি চলাকালে চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,গত বুধবার সাপ্তাহিক মজুরি প্রদান করার দিনে চা বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারে নি। দু’সপ্তাহ ধরে সাপ্তাহিক মজুরী দিতে পারছেনা চা বাগান কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে মদনমোহন চা বাগানে দেখা যায়,চা বাগানের শ্রমিকরা বাগানের কাজ বন্ধ রেখে চা বাগানের ম্যানেজার অফিসের সামনে জড়ো হয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। সেখানে চা শ্রমিক রাম সেবক দাস,সীতারাম করি, নারী শ্রমিক আদরী বাক্তি,শীলা দুষাদ,কুনতলা কুর্মী বলেন,”আমরা তলব,রেশন পাই না। দু’সপ্তাহ ধরে মজুরী বন্ধ,কাজ করে যদি মজুরী না পেলে,স্বামী,শশুড়-শাশুড়ী বাচ্চাদের উপোস রাখতে হচ্ছে। সাপ্তাহের তলব (মজুরী) সাপ্তাহে দিতে হবে, না দিলে আমরা আন্দোলনে করবো। চা শ্রমিক সাবিদ আলী,বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ঊমাশংকর গোয়ালা,সম্পাদক অযোদ্ধা প্রসাদ কৈরী বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরী ও রেশন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সারা সপ্তাহ যদি কাজ করে শ্রমিকরা অপোস দিন কাটাতে হচ্ছে। চা শ্রমিকরা তাদের সাপ্তাহিক মজুরীর উপর নির্ভরশীল,সাপ্তাহিক মজুরীর টাকা দিয়েই তাদের সারা সপ্তাহের বাজার করেন। দু’সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও আমাদের শ্রমিকদের মজুরী দেয়া হয়নি। আমরা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি, দ্রæত চা শ্রমিকদের মজুরীর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন, নতুবা চা-শ্রমিকরা আন্দোলন করতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের দলই ভ্যালী সভাপতি ধনা বাউরী বলেন, যদি দ্রæত সময়ের মধ্যে মজুরী না দেওয়া হয় তাহলে শ্রমিকরা কঠোর আন্দোলনে নামবেন। মদনমোহন চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, বর্তমানে চা বাগান গুলি চলছে কৃষি ব্যাংকের ঋণের এর উপর। কৃষিব্যাংক ঋণ সেনশন না করার কারণে সঠিক সময়ে শ্রমিকদের মজুরী দেয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। আশা করছি দ্রæতই শ্রমিকরা তাদের মজুরী পাবেন।
Leave a Reply