আজিজুর রহমান,কেশবপুর(যশোর): কেশবপুর উপজেলার বিলখুকশিয়ার বিলে মাছের ঘেরের পাড়ে গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অসময়ে রসালো তরমুজ চাষে এবছর প্রায় ৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন তরমুজ চাষিরা। ৯০ দশকে উপজেলার ৮নং সুফলাকাটী ইউনিয়নের বিশাল অঞ্চলের বিল খুকশিয়ার বিল ছিলো বিল পাড়ের মানুষের অভিশাপ। স্থানীয় জলাবদ্ধতার কারণে বিলটি তাদের গলার কাটা। বিল পাড়ের হাজার হাজার কৃষক তাদের পেশা বদল করে অনেকে শহরে রিক্সা চালিয়ে, বিলে শামুক কুড়িয়ে বা মাছ শিকার করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হতো। এরপর কৃষকরা তাদের বিলে মাছের ঘের তৈরি করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন শুরু করে। এরমধ্যে তারা ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ শুরু করে। তার পরে শুরু করে ঘরের পাড়ে অসময়ের রসালো ফল গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ চাষ। গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ চাষ করে শত-শত কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তাদের মনে এখন নতুন স্বপ্ন। সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে সরেজমিনে বিলখুকশিয়া বিলে পরিদর্শন কালে দেখা গেছে এবছর উপজেলায় ১০ হাজার ৫৫৬ টি ঘেরে মাছের চাষ হয়েছে। শুধু বিলখুকশিয়া বিলে ঘেরের পাড়ে ১০ হাজার হেক্টর জমির ঘেরের পাড়ে তরমুজের চাষ হয়েছে। যে দিকে তাকায় শুধু ঘেরের উপরে তরমুজ আর তরমুজ। যাতে উৎপাদন হবে প্রায় সাড়ে ৫শ টন তরমুজ। বর্তমান চড়ামূল্যের বাজারে তার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। খুকশিয়ার বিলে যেদিকে তাকায় শুধু ঘেরের পাড়ে অসময়ে তরমুজ চাষ। কৃষকরা তাদের ঘেরের ভিতরে মাছের চাষ ও তার ভেড়ির পাড়ে তরমুজের চাষ। আর এই অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফলতায় কৃষকরে মুখে হাসি ফুটেছে।বিল পাড়ের কৃষক মাছের ঘেরের ভেড়ির উপর তরমুজ চাষিকারী রুহুল আমীন এ প্রতিনিধিকে বলেন, তিনি ১২ বিঘা জমির ঘেরের ভেড়ির উপরে ১৭শ তরমুজের চারাগাছ রোপণ করেছেন। তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তিনি ২ হাজার ৭শ মন তরমুজ পেতে পারেন এবং তিনি এই তরমুজ বিক্রি করে প্রায় আড়ায় লাখ টাকা লাভের আশা করেছেন। বিল পাড়ের অপর এক কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, তিনি অনেকের তরমুজ চাষ দেখে এবছর প্রথমবার অসময়ে তরমুজের চাষ করেছেন। নৌকার উপর বসে তরমুজ গাছের পরিচর্যা করতে করতে বলেন, অল্প জমিতে তরমুজ চাষ করে খুব সফলতা পেয়েছি। ইতিমধ্যে ৫০ মন তরমুজ বিক্রি করে প্রায় ৮০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের উৎপাদিত তরমুজ আমাদের অঞ্চলের চাহিদা পুরণ করে ব্যবসায়ীরা আমাদের নিকট থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে দেশের রাজধানী ঢাকা সহ খুলনা, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া,যশোর জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করছে। এবং অসময়ে তরমুজে খুব চাহিদা। কৃষক আবুল বাশার বলেন, খুকশিয়ার বিলে ঘেরের পাড়ে তরমুজ চাষ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় ৮০ ভাগ কৃষক তাদের ঘেরের পাড়ে অসময়ে তরমুজ চাষ করেছে। তিনি আরো বলেন,ঘেরের পাড়ে গ্রীশ্মকালীন তরমুজ চাষে সবচেয়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
Leave a Reply