সুজন বিশ্বাস শৈলকুপা ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ মেয়েটির নাম আছিয়া, বয়স আনুমানিক বারো বছর, পিতার নাম আব্দুল্লাহ ( মাত্র দুই মাস আগে সাপে কেটে মারা গেছে ), গ্রাম কুলবাড়িয়া, হরিণাকুন্ডু। মেয়েটিকে গতকাল রাতে কোনো এক সময় ঘুমের মধ্যে ছবির কালাচ সাপটির কামড়ের শিকার হয় । রাতে মেয়েটি টের পায়নি তাকে কখন সাপে কেটেছে । সকালে সে জানায় তার শরীর ব্যাথা করছে এবং বমি বমি ভাব হচ্ছে । সে জানায় তাকে কিছু একটা কামড়েছে । স্বজনরা তাকে ওঝার কাছে নিয়ে যায় । আনুমানিক সকাল দশটা পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক করে। পরে আছিয়া অচেতন হয়ে গেলে তাকে হরিণাকুন্ডু হাসপাতালে নিয়ে যায় । স্পস্ট করে সাপের কথা বলতে না পারায় এবং ক্ষতস্থান না থাকায় হরিণাকুন্ডু হাসপাতালের চিকিৎসকরা হয়তো ডায়াগোনোসিস করতে পারেনি, অথবা ঝুঁকি নেয়নি । তার মধ্যে সাপে কাটার সব লক্ষন ছিলো । হরিণাকুন্ডু হাসপাতালে দুই ডোজ এন্টিভেনোম ছিলো । দুপুর বারোটার দিকে আছিয়াকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে রেফার্ড করে। সেখানেও সে চিকিৎসা পায়নি, অথবা তার চিকিৎসা দেওয়ার পর্যায়ে সে ছিলো না । কুষ্টিয়া হাসপাতালে মেয়েটি মারা যায় ! এখনো সমাজের গভীরে রয়ে গেছে অসচেতনতা, কিছুতেই পুরোপুরি বের করে আনা যাচ্ছে না মানুষ কে। কিছুতেই কাটানো যাচ্ছে না স্নেক বাইট ট্রিটমেন্টে চিকিৎসকদের দিধাদ্বন্দ ! চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ বা চেষ্টা নেই, স্বাস্থ বিভাগের স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ নেই ! ব্যক্তিগত ভাবেও স্নেক বাইট ট্রিটমেন্টে করতে বা শিখতে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসা চিকিৎসকের সংখ্যা খুব কম ! এন্টিভেনোম দেওয়ার কথা শুনলে যেনো ডাক্তারদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ! বেশির ভাগ চিকিৎসক ভয় পায়, তাড়াতাড়ি সরাতে পারলে বাঁচে ! সন্ধ্যায় মেয়েটির জানাযার সময় মেয়েটির ঘর থেকে ঘাতক কালাচ সাপটিকে পাওয়া যায় ! আছিয়ার পিতা আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়েছিলো গোখরা সাপের কামড়ে । সাপে কাটলে প্রথম ঘন্টায় হাসপাতালে পৌছান ! সাপে কাটা রোগী এলে ডাক্তার ভায়েরা দয়া করে গুরুত্ব দিন, না পারলে শিখুন ! এন্টিভেনোমের সাইডইফেক্টে দেশে কোনো মানুষের মৃত্যুর ঘটনা নেই ।
Leave a Reply