জাহাঙ্গীর আলম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের বলুহর ইউনিয়নের সিঙ্গিয়া গ্রামের রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী দেখার কেউ নাই। ডিজিটাল বাংলাদেশে আধুনিকতার ছোঁয়া সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লেও সেই ছোঁয়া না পাওয়া তালিকার মধ্যে সিঙ্গিয়া গ্রাম একটি। গ্রাম টি অবহেলিতভাবে বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন বিমুখ হয়ে রয়েছে। এই গ্রামের রাস্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা অপ্রতুল। বর্তমান সরকারের আমলে দেশব্যাপী গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের আওতাধীন হলেও সেই উন্নয়নের ছোঁয়া সিঙ্গিয়া গ্রামের মানুষ পায় নাই। গ্রামের একপাশ ঘেঁষে রয়েছে বাওড় এবং গ্রামে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য আছে তিনটি রাস্তা। এর মধ্যে একটি রাস্তা মাটির হলেও অপর দুইটি রাস্তা ইটের ছলিং। যা মানুষের চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী। কেননা এই রাস্তা অনুন্নত, ভাঙ্গাচোরা, গর্ত। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টকর। ফলে গ্রামের মানুষ গুলো প্রতিনিয়তই চলাচলে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমনঃ হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে, গর্ভবতি মহিলাকে জরুরী হাসপাতালে নেওয়া, বাইরে থেকে মেহমান আসলে গ্রামে যেতে যানবাহন না পাওয়ায় ( ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কারনে কোনো যানবাহন যেতে চাই না) হঠাৎ আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌছাতে বিলম্ব হয়। প্রতিটি নির্বাচনে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ এই গ্রামের রাস্তা নির্মাণে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো পর্যন্ত কেউ কথা রাখেনি। ফলে অবজ্ঞা ও অবহেলায় পড়ে আছে রাস্তাটি। গ্রামের মানুষসহ এই রাস্তা ব্যবহারকারী সকলকেই চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। যে কারণে এই গ্রামের মানুষগুলো এখন চরম ক্ষুব্ধ। জনসংখ্যায় ছোট এই গ্রামটিতে ভোটার রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫ শত। কিন্তু ভৌগলিক কারণে ছোট গ্রামটির আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের অন্তরায় হয়ে রয়েছে এই গ্রামের রাস্তাটি। আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এই গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল থাকলেও যোগাযোগের অভাবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। এই গ্রামে কোন স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান নাই। রাস্তা ভাঙ্গাচোরা হওয়ায় জরুরীভাবে রোগী আনা নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মাহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রামের রাস্তায় চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য। তাই মাঝে মধ্যে মনে হয় গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়ে বসবাস করি। একজন ইউপি সদস্য হিসেবে সাধ্যনুসারে বরাদ্দকৃত যতটুুকু পাই তা দিয়ে গ্রামের উন্নয়নের চেষ্টা করি। বলা চলে এই গ্রামের মানুষগুলো নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। গ্রামের উন্নয়নে, কিংবা রাস্তা পাকা করনে বর্তমান নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল সালাউদ্দীন মিয়াজীর (অবঃ) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সিঙ্গিয়া গ্রামবাসী। গ্রামে প্রবেশের রাস্তা ভাঙ্গাচোরা ইট উঠিয়ে পাকা করে দিলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে যেমন নব দিগন্তের সূচনা হবে। তেমনিভাবে এর সুফল ভোগ করবে সিঙ্গীয়া গ্রামসহ আশে পাশের কয়েক গ্রামের খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষগুলো। তাই “ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ হবে ” সরকারের এই নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সিঙ্গিয়া গ্রামের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবী।
Leave a Reply