মো ইফাজ খাঁ মাধবপুর হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ- হবিগঞ্জ পৌরসভায় জমে থাকা ২৫ বছরের ময়লা আবর্জনা অপসারণ ও পরিবেশ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২৩ পাওয়া কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মেয়র আতাউর রহমান সেলিম। গতকাল সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিনন্দন জানান। পদক পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন হবিগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী, সহকারি কমিশনার নাভিদ সারোয়ার, হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী দিলীপ দত্ত ও হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহনেওয়াজ তালুকদার। কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে মেয়র বলেন,‘সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির ও সাবেক জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের নেতৃত্বে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে আধুনিক স্টেডিয়ামের পাশ থেকে দীর্ঘ ২৫ বছরের আবর্জনার স্তুপ নতুন ডাম্পিং স্টেশনে অপসারণ করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ‘আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই আবর্জনা অপসারণের জন্য একটি ডাম্পিং স্টেশনের উদ্দেশ্যে জমির সন্ধান করতে থাকি পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ ও আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য। সাবেক জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে নানা লোকেশনে ঘুরে বেড়িয়েছি। অবশেষে হবিগঞ্জ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে উত্তরকূল মৌজায় অবস্থিত ১০০ শতক জমি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫ বছরের জন্য ইজারা গ্রহন করি। ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর শহরের বাইপাস থেকে ২৫ বছরের জমানো আবর্জনা ওই ১০০ শতক জমিতে স্থানান্তর শুরু করি। ইতিমধ্যে উত্তরকূল মৌজায় রিচি ইউনিয়নের অন্তর্গত ২ একর ৩ শতক জমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পৌরসভার স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনের জন্য বরাদ্দ পাওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির ও সাবেক জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের সহযোগিতার কারণে স্থায়ী ও অস্থায়ী দুটি ডাম্পিং স্টেশনের জমি বরাদ্দ ও বন্দোবস্ত পাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়। মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন,‘নতুন ডাম্পিং স্টেশন বাস্তবায়ন করা একদিনে সম্ভব হয়নি। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। সেই পথচলায় আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল।’ মেয়র বলেন, ‘আমি মনে করি এখনো এ কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এই মূহুর্তে পৌর এলাকার প্রায় ৭০ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে। বর্জ্য সংগ্রহ, অপসারণ, সজ্জিতকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সর্বোপরি রিসাইকিং প্ল্যান্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা আমাদের উদ্দেশ্য।’ মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘গত ৩০ মে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জণপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহিন আরা বেগম পিএএ, উপসচিব রেহানা আক্তারকে নিয়ে নতুন ডাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। ৮ জুন পৌরসভার ময়লা অপসারণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন ¯’ানীয় সরকার বিভাগ (নগর উন্নয়ন) এর যুগ্ম সচিব হাবিবুর রহমান। ১৫ জুলাই হবিগঞ্জ প্রেসকাবের নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে ডাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করি।’ এছাড়া নতুন ডাম্পিং স্টেশনে যাওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এর বরাদ্দে সরকারের ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সড়টিকে আইডিযুক্ত করতে সহযোগিতা করায় এলজিইডি হবিগঞ্জের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছির ও প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের প্রতি মেয়র কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জ পৌরবাসীকে আবর্জনার দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি দিতে পৌরসভার তহবিল থেকে এ পর্যন্ত কোটি টাকার উপরে ব্যয় হয়েছে। এ কাজে এখনও প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। তিনি বলেন,‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়নে জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য বিভাগের সহযোগিতায় হবিগঞ্জ পৌরসভা ইতিবাচক অভূতপূর্ব কর্মকান্ডে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২৩ প্রদান করা হয়েছে। এই সম্মাননা ও উৎসাহ প্রদানের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, এমপি আবু জাহির ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও আমি হবিগঞ্জ পৌরবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
Leave a Reply