পি কে রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আয়োজনে সাঁওতাল বিদ্রোহের মহানায়ক সিধু ও কানুর স্মরণে ১৬৮তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত হয়েছে। গত শুক্রবার (৩০ জুন) দুপুরে মহলবাড়ী, মুকুন্দপুর ও দূর্গাডাঙ্গা শ্বশানঘাট মাঠ প্রাঙ্গণে র্যালী, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগস্টিন হেমরম, সভাপতি, আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতি চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। বিশেষ অতিথি লুকাশ মার্ডী, সহ-সভাপতি, আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতি চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। শিবু হাজদা, সাধারণ সম্পাদক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতি চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। হরিনাথ হেমব্রম, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতি চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। মিলন সরেন, কোষাধ্যক্ষ আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতি চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। সাদেক মুরমু পারগানা পরিষদ চিরিরবন্দর, দিনাজপুর। প্রধান অতিথি আগস্টিন হেমরম তার বক্তব্যে বলেন, “৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। এ বছর সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬৭ বছর পূর্ণ হল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামের নাম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস, আর এ দিনকে স্মরণ করে পালিত হয় এ দিবস। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক ২ বছর আগে ১৮৫৫ তে ঘটে যাওয়া এ বিদ্রোহই ছিল ইংরেজদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার প্রথম আন্দোলন। ১৬৭ বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু-কানহু-চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে তারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সৈন্য ও তাঁদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের মুক্ত করা”। আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবু হাজদা বলেন, “১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। সাঁওতালরা তির-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিল বন্দুক ও কামান। তারা ঘোড়া ও হাতি যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা যান। যুদ্ধে সিদু-কানহু-চান্দ ও ভাইরো পর্যায়ক্রমে নিহত হলে ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে যুদ্ধ শেষ হয় ও বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে”। এছাড়াও রবিন মার্ডী, সুপল বাস্কে, বয়লা বাস্কে দিলিপ কুমার রায়সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply