লিপি খাতুন,কেশবপুর (যশোর): কেশবপুরে ছেলেরা জমি লিখে নিয়ে বয়োবৃদ্ধ বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বরিবার ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার বুড়ুলী গ্রামের বৃদ্ধ বারিক গাজী (৮৪) ও বৃদ্ধা শহর বানু (৭৮) সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায় হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট। চলাফেরা করতে না পারায় ভ্যানে করে নিয়ে আসেন তাদের ৪ মেয়ে। খাওয়া-দাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোনেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯নং গৌরীঘোনা ইউনিয়নের বুড়ুলী গ্রামের বৃদ্ধ বারিক গাজীকে (৮৪) গতবছর চিকিৎসা করানোর কথা বলে ছোট ছেলে সাঈদ গাজী (৪২) কেশবপুরে এনে কৌশলে টিপসহি নিয়ে ২৪ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধের মেয়েরা স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালেও তারা সালিশ করেও মিমাংশা করতে ব্যর্থ হন। এছাড়া বড় ছেলে সাজ্জাত গাজী (৪৮) বাবা-মায়ের থাকার ঘর ভেঙ্গে বাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। বৃদ্ধ বারিক গাজীর মেঝো মেয়ে পাশের দশকাহুনিয়া গ্রামের কোহিনুর বেগম এ প্রতিনিধি কে বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে ভাইয়েরা পিতা মাতাকে তাড়িয়ে দেওয়ায় তার বৃদ্ধ বাবা ও মা আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা ৪ বোন বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে সুষ্ঠু বিচার ও ভাইয়েরা যাতে ভরণ-পোষণ দেয় তার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান কাজল বলেন, ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ২ ছেলে ও ৫ মেয়ে। ছোট ছেলে সাঈদ গাজী খাওয়া-দাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাবা বারিক গাজীর কাছ থেকে ২৪ শতক জমি লিখে নিয়েছে। এ জমি নিয়ে কয়েক দফা সালিশ করেও মিমাংশা করা সম্ভব হয়নি। ওই বৃদ্ধ তার সহায় সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে দিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। ছেলেরা ভরণ-পোষণ দেওয়া তো দূরের কথা, যে ঘরটায় ছিল তার চালাও ভেঙ্গে দিয়েছে। যা দুঃখজনক ঘটনা। অভিযোগের বিষয়ে সাজ্জাত গাজীর স্ত্রী নাসিমা খাতুন মুঠোফোনে বলেন, তার শ্বশুর-শাশুড়িকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। স্বেচ্ছায় তারা চলে গেছে। জমি লিখে নিয়েছে ছোট দেবর সাঈদ গাজী। এ বিষয়ে সাঈদ গাজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে রবিউল ইসলাম জানায়, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে তার বাবার সঙ্গে দাদা-দাদির কি হয়েছে সেটি তিনি জানেন না। ৯নং গৌরীঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, বৃদ্ধ বারিক গাজীর কাছ থেকে সন্তানেরা জমি লিখে নিয়ে ভরণপোষণ না দেওয়ায় ওই বৃদ্ধরা অসহায় হয়ে পড়েছে। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য কয়েক দফা বসাবসি করেও কোন কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ছেলেদের বিরুদ্ধে জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply