মোঃ মুনাইম ইসলাম, ্ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি অবশেষে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার শেষে তিন মাস পর দেশে ফিরেছে প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সৌদি প্রবাসী যুবক রিপন হোসেনের মরদেহ। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামে জানাজা শেষে তার দাফন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সৌদি আরবের রিয়াদ শহর থেকে ছেড়ে আসা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের একটি ট্রানজিট (রিয়াদ-কলম্বো-ঢাকা) কার্গো ফ্লাইটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরাদেহ পৌঁছে। সকল কার্যক্রম শেষে আশাদুল হকের হাতে মরদেহের কফিনটি হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জীবননগর উপজেলা উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের সৌদি প্রবাসী রিপন হোসেন। নিহত রিপন হোসেন উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশাদুল হকের ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে ৫ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান রিপন। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আল কাসিম ব্রূদা শহরের একটি কৃষিখামারে কাজ করতেন তিনি। রিপন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার জিন্নানগর গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মোবাইল ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া ও বাগ্বিতণ্ডায় রিপন (২৮ ডিসেম্বর) প্রেমিকা ভিডিওকলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। রিপনের বন্ধুরা কাজ শেষে ঘরে ফিরে রিপনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পাশে থাকা মোবাইল ফোনে তারা একটি মেয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার প্রমাণও পান। কিন্তু রিপনের লিগ্যাল ডকুমেন্টস না থাকায় সৌদির সরকারি দাপ্তরিক কাজে মরদেহ পাঠানোয় জটিলতা দেখে দেয়। সৌদি প্রবাসী বশিরউদ্দীনের মাধ্যমে জানা যায়, প্রবাসী রিপনের মরদেহ দেশে প্রেরণে কোনো সরকারি অর্থায়ন নেই। দেশটির ভিসানীতি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে চুক্তিবিহীন স্বেচ্ছায় কাজ করে বেড়াতেন তিনি। এই কারণে তার মৃত্যুতে কফিল কোনো প্রকার খরচ বহনে বাধ্য নন। তার লিগ্যাল ডকুমেন্টস না থাকায় তার কোনো ইনস্যুরেন্স কোম্পানি বহন করবে না বলে জানান তার কোম্পানি। নিজেদের অর্থায়নে মরদেহ নিজ দেশে ফেরত নিয়ে আসতে হবে। এমতাবস্থায় ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ দূতাবাস, রিয়াদের প্রথম সচিব শ্রম (স্থানীয়) স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে স্থানীয়ভাবে দাফনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জারি করা হয়। মৃতদেহের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় দাফন করলে দূতাবাসের কোনো করণীয় থাকবে না। পরবর্তীতে উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের কৃতী সন্তান সৌদি প্রবাসী রায়হানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, সৌদি প্রবাসী আরটিভি প্রতিনিধি বশির উদ্দীন ও ইন্ডিয়ানভিত্তিক প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার সহযোগিতায় প্রায় ১১ হাজার রিয়াল অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে তার মরদেহ পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে রিপনের পরিবার, কোনো জনপ্রতিনিধি বা কোনো জেলা জনশক্তি অফিস এতে ন্যূনতম সহযোগিতা করেনি।
Leave a Reply